মেহগনির গুণাগুণ- ডায়াবেটিস ক্যান্সারে বিশেষ কার্যকরী - চ্যানেল দূর্জয়

Most Popular

asdsaa.png চ্যানেল দূর্জয়-নির্ভীক যে কণ্ঠস্বর

সদ্যপ্রাপ্ত

Post Top Ad

asdsaa.png

মেহগনির গুণাগুণ- ডায়াবেটিস ক্যান্সারে বিশেষ কার্যকরী





প্রকার: এটি দ্বিবীজপত্রী গুপ্তবীজী উদ্ভিদ। এটি meliaceae (নিম) গোত্রের অন্তর্গত Swietenia গণের কিছু প্রজাতির সাধারণ নাম। এই প্রজাতিগুলোর ভিতরে তিনটি প্রজাতিকে বিশেষভাবে মেহগনি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। এই প্রজাতিগুলো হলো–  Swietenia mahagoni (L.) Jacq., Swietenia  macrophylla King, and Swietenia  humilis Zucc।

প্রপ্তি স্থান: এদের আদি নিবাস উত্তর আমেরিকার ক্রান্তীয় অঞ্চল। বিশেষ করে পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জকেই এদের আদি নিবাস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। ইউরোপীয় বণিকদের মাধ্যমে ভারতবর্ষসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে এই গাছটি ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার দক্ষিণে এই গাছগুলো প্রাকৃতিকভাবে জন্মে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই গাছের চাষ করা হয়। প্রজাতিভেদে বড় বা ছোট মেহেগনি নামে অভিহিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ Swietenia mahagoni এবং Swietenia  macrophylla প্রজাতি দুটির চাষ হয়ে থাকে। এর ভিতরে  Swietenia macrophylla জাতীয় গাছ বেশি দেখা যায়। এদের পাতা বেশ বড় বড় হয়ে থাকে। এই গাছগুলো প্রায় ৫০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।



বাংলাদেশে বসন্তকালে (মার্চ মাসে) মেহগনিগাছের পাতা ঝরে যায়। এর কিছুদিন পর নতুন পাতা গজায়। এই গাছটি মূলত কাঠের জন্য জনসাধারণের কাছে আদৃত। এর কাঠ খুব শক্ত এবং ঘন আঁশযু্ক্ত। মূলত আসবাবপত্র তৈরি করার জন্য এই গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ছায়াপ্রদানকারী বৃক্ষ হিসাবে পথের পাশে এই গাছ লাগানো হয়।এই গাছটি মূলত কাঠের জন্য জনসাধারণের কাছে আদৃত। এর কাঠ খুব শক্ত এবং ঘন আঁশযু্ক্ত। মূলত আসবাবপত্র তৈরি করার জন্য এই গাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ছায়াপ্রদানকারী বৃক্ষ হিসাবে পথের পাশে এই গাছ লাগানো হয়।

ঔষধী গুন/উপকারিতা

* ডায়াবেটিক রোগীরা রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য মেহগনি ফলের বিচির ভেতরের সাদা শাঁস পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন। এতে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

* মেহগনিগাছের বাকলের নির্যাস শক্তিবর্ধক এবং হজমশক্তি বাড়ায়।

* বিচি, ফল ও মূলের গুঁড়ো খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়।

* মেহগনি বীজের সাদা অংশ দিয়ে তেল তৈরি হয়। এই তেল ভেষজ কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

* ফসল পাখির আক্রমন থেকে বাচাতে মেহগনি গাছের ডাল কলম করে লাগিয়ে চাড়ার মত করে ক্ষতের পাশে লাগালে পাখির আক্রমন থেকে বাচা যায়। এই গাছে পাখি বাসা বানায় না এমনকি বসেওনা।



কিটনাষক হিসাবে ব্যবহার:

এখানে গবেষণালব্ধ ফলাফল হতে মেহগনি ফল থেকে সংগৃহীত নির্যাস ও তেল ভেষজ কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার ও প্রয়োগ পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো।

প্রথমত : ২ থেকে ২.৫ কেজি মেহগনি ফল কুচি কুচি করে কেটে থেঁতলিয়ে মাটির চাড়িতে ১০ লিটার পানিতে ভালোভাবে ভেজাতে হবে। ৩ থেকে ৪ দিন পর নির্যাসটি ব্যবহার উপযোগী হয়। নির্যাসটি কাপড়ে ছেঁকে অল্প পরিমাণ (৫০ গ্রাম) সাবান গোলা পানি অথবা ডিটারজেন্ট মিশিয়ে ছেঁকে নিয়ে ফসলের ৰেতে সেপ্র করতে হবে। ধান ফসলের জন্য মিশ্রণটি উপযোগী। ধান ফসলের শত্র্ব পোকা (মাজরা, পাতা মোড়ানো, বাদামি গাছ ফড়িং) দমনে নির্যাসটি কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়া সবজিতেও (বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, টমেটো, শিম, বরবটি) নির্যাসটি ব্যবহার করা যায়।দ্বিতীয় বার আবার ৫ লিটার পানিতে ভিজিয়ে ৩-৪ দিন পর আর একবার ছিটানো যায়। নির্যাসের উচ্ছিষ্ট অংশ/ছোবড়া ভেষজ জৈব সার হিসেবে ধান ও সবজি বীজতলায় ব্যবহার করলে চারা উৎপাদনে পোকামাকড় কম হয়।

দ্বিতীয়ত : মেহগনির আধাপাকা ফলের বীচি ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম পরিমাণ গুঁড়া করে বা থেঁতলিয়ে তার সাথে ৫০০ গ্রাম ফলের বাকল গুঁড়া বা পাতা নিয়ে ৫ লিটার পানিতে ভালোভাবে একটি মাটির হাঁড়িতে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট আগুনে জ্বাল দিতে হবে। জ্বালানোর সময় ৫ মিনিট পর ৫০ গ্রাম পরিমাণ কাপড় কাঁচা সাবান বা ডিটারজেন্ট, ১০ গ্রাম তুঁতে ও ৫ গ্রাম পরিমাণ সোহাগা মাটির হাঁড়ির মিশ্রণের ভেতর দিতে হবে। একটি কাঠের বা বাঁশের কাঠি দিয়ে মিশ্রণটি নাড়তে হবে। এভাবে নির্যাস তৈরি হলে ঠাণ্ডা করে নির্যাস ৫ গুণ পরিমাণ পানিতে মিশিয়ে ভালোভাবে ছেঁকে আক্রান্ত গাছের পাতায় সেপ্র করতে হবে এভাবে তৈরি নির্যাস ১-২ দিনের মধ্যে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায় ও বেগুন ফসলের পোকা দমনে উপযোগী। জাব পোকা, পাতা ছিদ্রকারী পোকা দমন এবং ছত্রাক রোগ দমনে বিশেষ উপযোগী। তৃতীয়ত : ২০০-২৫০ গ্রাম বীজ নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে ১ লিটার পানিতে ৩-৪ দিন ভিজিয়ে রেখে ছেঁকে নিয়ে আরো ৯ লিটার পানিতে মিশিয়ে নির্যাস তৈরি করে ১ চামচ জেট পাউডার মিশিয়ে ফসলের ৰেতে সেপ্র করা যায় (মাজরা, পাতা মোড়ানো ও বাদামি গাছ ফড়িং দমনে কার্যকর)।

গুদামজাত শস্যের জন্য : ২০০ গ্রাম মেহগনি ফলের বীচির গুঁড়া ১ মণ দানাজাতীয় শস্যের জন্য ব্যবহার করা যায় (রৌদ্রে ভালোভাবে বীচি শুকিয়ে গুঁড়া করতে হবে)। দানাজাতীয় শস্যের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে বায়ুশূন্য প্যাকেটে সংরৰণ করতে হবে।

১ কেজি বীজ থেকে খোসা ছাড়িয়ে ৬৫০-৭৫০ গ্রাম সাদা শাঁস বীজ পাওয়া যায়। সাদা শাঁস বীজ ৩১২ কেজি হতে হাতের সাহায্যে ৯০০ মিলি. থেকে ১০০ মিলি. মেহগনি তেল পাওয়া যায়। এক্সপেলারে ভাঙালে আরো বেশি পরিমাণে তেল পাওয়া যেতে পারে। তেল তৈরির পর অবশিষ্টাংশ খৈল রৌদ্রে ভালোভাবে শুকিয়ে বায়ু শূন্য পলিব্যাগে সংরৰণ করা যেতে পারে। মেহগনি ফল জানুয়ারি, ফেব্র্বয়ারি মাসে পরিপক্ব হয়। বছরে গাছপ্রতি ৫০-৩০০ বা তার চেয়ে বেশি পরিপক্ব মেহগনি ফল পাওয়া যায়। প্রতিটি ফল ১৫০-৬০০ গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে। ফলের মধ্যে ৩৫-৭০টি বীজ থাকে যার রঙ বাদামি। যদি সংরৰণ করতে হয় তবে পরিপক্ব বীজ হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে কাঁচা ফল থেকে নির্যাস পেতে হলে মাস থেকে ব্যবহার করা যাবে। মেহগনি ফলের বাকল শুকিয়ে গুঁড়া করে বায়ুশূন্য পাত্রে সংরৰণ করে অন্য মৌসুমে ব্যবহার করা যাবে। মনে রাখতে হবে ফল সংগ্রহ করে খোসা ও বীজ ভালোভাবে শুকিয়ে বায়ুশূন্য পাত্রে না সংরৰণ করলে ছত্রাক জমে যাবে। মাঝে মধ্যে রৌদ্রে শুকানো ভালো। কারণ ফল বীজ ও খোসা বায়ু থেকে আর্দ্রতা সংগ্রহের ৰমতা বেশি।

মেহগনি বীজের সাদা অংশ দিয়ে তেল তৈরি এবং ভেষজ কীটনাশক ও তার ব্যবহার

ধানের শত্র্ব পোকা দমনে ১০ লিটার পানিতে ৩০-৩৫ মিলি. ওষুধ ১ চামচ ডিটারজেন্ট/জেট পাউডার মিশিয়ে ধান ফসলের কুশি ও পাতা ভালো করে ভিজিয়ে দিতে হবে। ধান ফসলের জমিতে খৈল ও পাতার গুঁড়া প্রয়োগ করলে জমিতে উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদান সংরৰণ করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া মাটির ৰতিকারক পোকামাকড় ধ্বংস করে। ফসলের ফলনও বৃদ্ধি হয়। লবণাক্ততা অনেকাংশে কমে যায়।

আমের হপার বা শোষক পোকা : ১০ লিটার পানিতে ৪০ মিলি. ওষুধ এবং ১ চামচ ডিটারজেন্ট/জেট পাউডার মিশ্রণ করে পাতা, ডাল ও মুকুল ভালোভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। বেগুনের ডগা ও ফলের মাজরা পোকা, কাঁঠালি পোকা, ঢেঁড়সের জ্যাসিড : ১০ লিটার পানিতে ৩০ থেকে ৩৫ মিলি ওষুধ এবং ১ চামচ ডিটারজেন্ট/জেট পাউডার মিশিয়ে ডগা, পাতার ওপরে ও নিচে ভালোভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে।

Post Top Ad

asdsaa.png