পৃথিবী ফেরত চেয়েছেন সৃষ্টিকর্তা
কি হল এত পরমাণু বোমা,
হাইড্রোজেন বোমা বানিয়ে?
আমেরিকার বি-স্টেলথ বোমারু
বিমান নাকি
আলপিনের ডগায় বোমা ফেলতে পারে কয়েক কিলোমিটার উঁচু থেকে,
রাশিয়ান ঝ৪০০ মিসাইল
ডিফেন্স সিস্টেম নাকি...
পৃথিবীকে কয়েক চক্কর
কেটে ফেলার ক্ষমতা রাখে।
অক১০৭ রাইফেল নাকি আস্ত ট্যাংক
উড়িয়ে দেয় এক নিমেষে।
মানুষ মারার কত আয়োজন...
মনে আছে?
সিরিয়ার সেই ৩ বছরের
ছেলেটির কথা...
বোমায় ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে
মরে যাবার আগে যে বলেছিল -
"আমি ঈশ্বরকে সব বলে দেব" !!
সে হয়তো ঈশ্বরকে সব ব'লে দিয়েছে।
হয়তো বলে দিয়েছে -
আমাদের পৈশাচিকতার কথা,
লোভের কথা, অসভ্যতার কথা,
নির্যাতনের কথা।
আমরা মানুষ মেরেছি হাজারে হাজার,
একে অপরকে ধ্বংস করার জন্য
মারণাস্ত্র বানিয়েছি লক্ষ-কোটি।
মানুষে মানুষে বিভেদ বাড়ানোর জন্য
তৈরি করেছি নানা গোপন অস্ত্র।
সুইডেনের ইন্টারন্যাশনাল পীস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে,
২০১৮ সালে পৃথিবীতে কেবলমাত্র যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য খরচ হয়েছে ১.৮২২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সে হয়তো ঈশ্বরকে সব বলে দিয়েছে।
বলেছে সেই পাখিটির কথা
যে আর আকাশে ওড়ে না;
বলেছে সেই আকাশের কথা,
যে একদিন নীল ছিল;
বলেছে সেই বাতাসের কথা,
যে একদিন নির্মল ছিল;
বলেছে সেই পৃথিবীর কথা,
যে একদিন সবার ছিল।
এই সবার পৃথিবীকে
আমরা ভাগ করেছি
ইচ্ছেমতো।
ধর্মের নামে, দেশের নামে,
ভাষার নামে মানুষকে দূরে সরিয়েছি।
চামড়ার রং দিয়ে,
গণতন্ত্রের নাম দিয়ে
কেটে টুকরো টুকরো করে দিয়েছি
আমাদের এই পৃথিবীকে।
সাগরপাড়ে পরে থাকা
আ্যালান কুর্দি,
কাঁটাতারে ঝুলতে থাকা, ফেলানি
তারা হয়তো সব বলে দিয়েছে ঈশ্বরকে।
ঈশ্বর তার পৃথিবী এবার
ফেরত চেয়েছেন।
তিনি হয়তো শুনেছেন
তাদের সব অভিযোগ...
হয়তো শুনেছেন প্রকৃতির আর্তনাদ --
শুনেছেন সেই পাখিটির কান্না।
এটাই হয়তো ঈশ্বরের মার,
কিংবা প্রকৃতির প্রতিশোধ।
বৈভবে মোড়া দুবাই-এর ৮২৮ মিটার
উঁচু মিনারের বুর্জ খলিফা
এখন নাকি খাঁ খাঁ করছে।
সোনা আর পেট্রো ডলারে মুড়ে রাখা
অহংকার থরথর করে কাঁপছে, মৃত্যুভয়ে।
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটা ভাইরাসের ভয়ে,
প্রবল পরাক্রমশালীরা অসহায়ের মত, ফ্যাল-ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে
কোটের কলার ফাটা বিজ্ঞানীর দিকে
অথবা রাতজাগা ক্লান্ত, অবসন্ন কিন্তু
হার না মানা জেদি ডাক্তার
আর নার্সের দিকে!
চরম উন্নাসিকতায় যাদের
দিকে কেউ
ফিরেও তাকায় না।
তবে এ যুদ্ধ কি কেবল
অদৃশ্য ভাইরাসের বিরুদ্ধে?
বোধহয় না...
একদিন হয়তো সব ঠিক হবে,
কিন্তু আমরা কি সত্যিই
মানুষ হবো?
এই অন্তহীন প্রশ্ন ভবিষ্যতের জন্য রেখে
আজ অন্তত বাঁচার স্বপ্ন দেখি।
সংগৃহীত
আবৃত্তি:
No comments:
Post a Comment