দূর্জয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। যিশু খ্রিষ্ট জেরুজালেমের বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেছেন বলে ইহুদি ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা জায়গাটিকে তীর্থস্থান হিসেবে বিবেচনা করে আসলেও বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন তার জন্মস্থান আসলে জেরুজালেমে নয়। তাদের দাবি, জেরুজালেমের নিকটবর্তী বেথলেহেমে নয়, বরং তার থেকে ১০০ মাইল দূরে লেবানন-সিরিয়া সীমান্তবর্তী নাজারাথের বেথলেহেম অঞ্চলে যিশুখ্রিস্টকে জন্ম দেন মা মেরি।
রাশিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম স্পুটনিক নিউজ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য।
প্রতিবেদনে ইতিহাসবিদদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, মা মেরির ছেলেকে ‘নাজারাথের যিশু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বাইবেলেই। সুতরাং নাজারাথের বাসিন্দা মেরি ও যিশু কেন নিজেদের অঞ্চল ছেড়ে ১০০ মাইল দূরের জেরুজালেমের বেথলেহেমে যাবেন, যেখানে নাজারাথের বেথলেহেম কিনা তাদের বাড়ির কাছেই? অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মেরির অতো দূরে যাওয়ার ব্যাপারটিও যুক্তিযুক্ত না।
তাদের মতে, দুই জায়গার নামই বেথলেহেম হওয়ায় এই ভুল বোঝবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। তীর্থযাত্রীরা নাজারাথের বেথলেহেমের বদলে জেরুজালেমের বেথলেহেমে যেতে শুরু করেন। চতুর্থ শতকে রোমান সম্রাজ্ঞী সেইন্ট হেলেনা যিশুর জন্মস্থান বলে পরিচিত ওই জেরুজালেমের বেথলেহেমেই উপাসনালয় তৈরির নির্দেশ দেন। সময়ের সঙ্গে এভাবেই ভুল বোঝাবুঝি স্থায়ী রূপ পায়।
বাইবেলে মেরির ছেলেকে ‘গালিলির যিশু’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে যেই অঞ্চলটিও নাজারাথের অংশ। সুতরাং ভৌগোলিকভাবে যিশুর জন্মস্থান নাজারাথের বেথলেহেম হওয়াই যুক্তিসঙ্গত।
১৯৯০ সাল থেকে যিশুর প্রকৃত জন্মস্থানের বিতর্ক নিয়ে কাজ করা ইসরায়েলের পুরাকীর্তি কর্তৃপক্ষের প্রতœতাত্ত্বিক ডক্টর আভিরাম অশরিমের মত, নাজারাথের কাছেই জন্ম নেন যিশু। তিনি এও বিশ্বাস করেন না যে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মা মেরি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জেরুজালেমে গেছেন। তার চেয়ে বড় কথা, শিশু যিশুকে নিয়ে পুনরায় এতো দূরের পথ পাড়ি দিয়ে নাজারাথে ফিরে আসা। ফিরতি যাত্রায় নবজাতকের জীবনই হুমকির মুখে পড়ার কথা।
এর চেয়ে মেরি গালিলি অঞ্চলের বেথলেহেম যিশুকে জন্ম দিয়েছেন সেটাই স্বাভাবিক।
বাইবেল বিশেষজ্ঞ মার্কাস বর্গ ২০১৫ সালে যিশুর প্রকৃত জন্মস্থান নিয়ে জানান, ঐতিহাসিকভাবে দেখলে মনে হয় যিশুর জন্ম নাজারাথেই হয়েছিল।
No comments:
Post a Comment